ঢাকা

রিফট ভ্যালির ঢালে ভূমিধস,নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২১

  • নিউজ প্রকাশের তারিখ : ইং
ছবি:সংগৃহীত ছবি:সংগৃহীত

কেনিয়ার পশ্চিমাঞ্চলের রিফট ভ্যালি এলাকায় টানা ভারি বর্ষণের পর ভয়াবহ ভূমিধসে অন্তত ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখনও নিখোঁজ রয়েছেন ৩০ জনের বেশি মানুষ। হঠাৎ ঘটে যাওয়া এই দুর্যোগে পুরো এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। উদ্ধারকাজ চলছে স্থানীয় প্রশাসন, সেনা ও পুলিশ সদস্যদের যৌথ প্রচেষ্টায়। খবর সিএনএনের।


স্থানীয় কর্মকর্তারা জানান, শনিবার (১ নভেম্বর) ভোররাতের দিকে প্রবল বৃষ্টির পর চেসোঙ্গচ এলাকার পাহাড়ি ঢালে ভূমিধস নেমে আসে। মুহূর্তের মধ্যে কয়েকটি বসতভিটা মাটির নিচে চাপা পড়ে যায়। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে। ধসে পড়া মাটির নিচে আটকা পড়েছেন অনেকে, যাদের উদ্ধারে চলছে রাতদিন অভিযান।


প্রশাসনের হিসাব অনুযায়ী, এক হাজারেরও বেশি বাড়িঘর ও কৃষিজমি ধ্বংস হয়েছে। আহত অন্তত ৩০ জনকে উদ্ধার করে এলডোরেট শহরের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, যেখানে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, প্রচণ্ড বৃষ্টি ও কাদার কারণে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বেশ কিছু গ্রাম, ফলে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে।


এলগেয়ো-মারাকওয়েট কাউন্টির পুলিশ কমান্ডার পিটার মুলিঞ্জে বলেন, “এখন পর্যন্ত ১৯ জনকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তবে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় উদ্ধারকর্মীরা বিপাকে পড়ছেন।” তিনি আরও জানান, সেনা ও পুলিশের পাশাপাশি স্থানীয় গ্রামবাসীরাও নিখোঁজদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন।


কেনিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কিপচুম্বা মুরকোমেন এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হতে পারে। সেনা ও পুলিশ হেলিকপ্টার মোতায়েন করা হয়েছে উদ্ধারকাজে সহায়তা দিতে। তিনি বলেন, “সরকার সব ধরনের ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম শুরু করেছে। নিহতদের পরিবারগুলোর পাশে থাকবে প্রশাসন।”


কেনিয়ায় গত কয়েক বছর ধরেই জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বন্যা, খরা ও ভূমিধসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বেড়ে চলেছে। দেশটির পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনিয়মিত বর্ষণ ও উষ্ণায়নের কারণে পাহাড়ি এলাকাগুলো এখন অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।


এদিকে, প্রতিবেশী উগান্ডার পূর্বাঞ্চলেও গত সপ্তাহে ভয়াবহ ভূমিধসে অন্তত ১৩ জন নিহত হয়েছে এবং বহু মানুষ নিখোঁজ। উগান্ডা রেড ক্রস জানিয়েছে, বৃষ্টিপাতের কারণে নদীগুলোর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেছে, যা নতুন করে বন্যার আশঙ্কা তৈরি করেছে।


পূর্ব আফ্রিকার এই দুটি দেশে পরপর ঘটে যাওয়া ভূমিধস এখন আঞ্চলিক জলবায়ু সঙ্কটের গভীরতা এবং মানবিক বিপর্যয়ের দিকটি আরও স্পষ্ট করে তুলেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, “এমন ভয়াবহ ধ্বংস আমরা আগে কখনো দেখিনি। সবকিছু মাটির সঙ্গে মিশে গেছে।”



কমেন্ট বক্স