নোয়াখালী প্রতিনিধি: ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার পেছনে গুপ্ত বাহিনী ও নিষিদ্ধ সংগঠনের হাত রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নুরুল ইসলাম সাদ্দাম।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে ২০১৩ সালের ১৪ ডিসেম্বরের সাত শহীদের স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, “শরিফ ওসমান হাদি ছিলেন জুলাই বিপ্লবের অন্যতম সেনানায়ক ও আপোষহীন নেতৃত্ব। আজীবন আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে তিনি কণ্ঠস্বর উঁচু করে রেখেছেন। গুলিবিদ্ধ হওয়ার দুই-তিন দিন আগেও তার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তখন তিনি আমাকে বলেছিলেন—তাকে হত্যার ষড়যন্ত্র চলছে। আমরা বারবার তাকে সতর্ক থাকতে বলেছি। কিন্তু হাদি বলত, ‘মওতের ফয়সালা আসমানে হয়। ঘরের ভেতর থাকলেও মৃত্যু আসলে ঠেকানো যাবে না।’”
তিনি আরও বলেন, “উদয় বা অস্তের কোনো ক্লান্তি আমাদের দুর্বল করতে পারবে না। শাহাদাতের আকাঙ্ক্ষা আমাদের রক্তের ধমনিতে প্রবাহিত। যারা মনে করে গুম, খুন, হত্যা কিংবা দেশান্তরিত করে ইসলামী ছাত্রশিবিরকে দমন করা যাবে, তারা ভুল করছে। কোম্পানীগঞ্জবাসীসহ সারাদেশকে জানিয়ে দিতে চাই—বাতিল শক্তিকে আমরা হুঁশিয়ার করছি।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির নোয়াখালী জেলা দক্ষিণের সভাপতি হাফেজ সাইফুর রসুল ফুহাদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও নোয়াখালী জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির ইসহাক খন্দকার।
এছাড়াও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় বায়তুলমাল সম্পাদক আনিসুর রহমান, কেন্দ্রীয় শিল্প ও সংস্কৃতি সম্পাদক এইচ এম আবু মুসা, কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের সদস্য ও নোয়াখালী শহর শাখার সভাপতি হাবিবুর রহমান আরমান, নোয়াখালী জেলা উত্তর শাখার সভাপতি দাউদ ইসলাম, নোয়াখালী-৫ আসনের জামায়াত প্রার্থী অধ্যক্ষ মাওলানা বেলায়েত হোসেন এবং বসুরহাট পৌর জামায়াতের আমির মোশাররফ হোসেন।
আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে কোম্পানীগঞ্জ ও আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিপুলসংখ্যক ছাত্র ও যুবক অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠান শেষে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভা এলাকায় আওয়ামী লীগ ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে সাতজন শিবিরকর্মী নিহত হন। তারা হলেন—আব্দুস সাত্তার, সাইফুল ইসলাম, মতিউর রহমান সজিব, আব্দুর নুর রাসেল, আব্দুল আজিজ রায়হান, সাইফুল ইসলাম এবং মো. মিশু।