 
    
     প্রিন্ট এর তারিখঃ Oct 31, 2025 ইং || প্রকাশের তারিখঃ Oct 31, 2025 ইং
গণভোট নিয়ে হ্যাঁ-না পোস্টের প্রতিযোগিতা ফেসবুক-ইনস্টায়
  
    
    
    
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোট ইস্যু ঘিরে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে দেশের জাতীয় রাজনীতিতে চলছে তুমুল আলোচনা ও বিতর্ক। দেশের অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল জাতীয় নির্বাচনের দিন গণভোট আয়োজনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। 
অন্যদিকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) জাতীয় নির্বাচনের আগেই গণভোট চেয়ে অনড় অবস্থান বজায় রেখেছে। এ পরিস্থিতিতে গণভোটকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয়েছে ‘হ্যাঁ’ ও ‘না’ পোস্টের বন্যা। বুধবার মধ্যরাত থেকে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ‘হ্যাঁ’ ও ‘না’ লেখা পোস্টে ভরে গেছে নিউজফিড। 
যারা নির্বাচনের আগে গণভোট চান, তারা ‘হ্যাঁ’ লেখা পোস্টার শেয়ার করছেন, আর যারা নির্বাচনের দিন বা তার পর গণভোটের পক্ষে, তারা ‘না’ পোস্টার ছড়িয়ে দিচ্ছেন। ফলে বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক মহল ও সাধারণ নেটিজেনদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রথমে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের পক্ষ থেকেই ‘না’ ক্যাম্পেইন শুরু হয়। এরপর এর পাল্টা জবাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে ‘হ্যাঁ’ ক্যাম্পেইন চালু করা হয়। মুহূর্তের মধ্যেই এই ‘হ্যাঁ-না’ প্রচারণা ভাইরাল হয়ে পড়ে। বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ছাত্রদলের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে প্রথম ‘না’ লেখা ফটোকার্ড পোস্ট করা হয়, যা পরে দলটির সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরও নিজেদের পেজে শেয়ার করেন।
এর প্রায় এক ঘণ্টা পর, রাত সাড়ে ১২টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ‘হ্যাঁ’ লেখা পোস্ট দেওয়া হয়। এরপর ভোরের দিকে ছাত্রদলের পেজে আরেকটি ফটোকার্ড প্রকাশিত হয়, যেখানে চারটি পয়েন্টে উল্লেখ ছিল— ‘সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ সংবিধান থেকে বাদ দেওয়ার ষড়যন্ত্রকে ‘না’, জুলাই সনদ পরিবর্তনের ষড়যন্ত্রকে ‘না’, জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটকে ‘না’ এবং “শত শহীদের রক্তে কেনা জুলাই কারও বাপের ‘না’।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সামাজিক মাধ্যমে এ ধরনের সংক্ষিপ্ত শব্দভিত্তিক প্রচারণা আসন্ন নির্বাচন ও গণভোট ঘিরে জনমত গঠনের এক নতুন কৌশল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দ্রুত একটি সরকারি আদেশ জারি করে গণভোট আয়োজনের সুপারিশ করেছে। কমিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী, গণভোটের ব্যালটে থাকবে প্রশ্ন— “আপনি কি জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫ এবং এর তপশিল-১-এ অন্তর্ভুক্ত সংবিধান সংস্কার প্রস্তাবসমূহের প্রতি সম্মতি প্রদান করছেন?” নাগরিকরা ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ চিহ্ন দিয়ে তাদের মতামত জানাবেন।
কমিশনের প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ একই সঙ্গে সংবিধান সংস্কার পরিষদ ও জাতীয় সংসদ হিসেবে কাজ করবে, এবং সংবিধান সংস্কার পরিষদ কার্যকর থাকবে সর্বোচ্চ ২৭০ দিন। বিকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, যদি পরিষদ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারে, তাহলে গণভোটে অনুমোদিত বিল স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে যুক্ত হবে।
এদিকে গণভোট নিয়ে দ্বন্দ্ব ক্রমেই তীব্র হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। তিনি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এই ইস্যুতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, এবং সেই সিদ্ধান্ত দেবেন প্রধান উপদেষ্টা নিজে।
 
    
        
       © সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃ Mirror News