প্রিন্ট এর তারিখঃ Nov 3, 2025 ইং || প্রকাশের তারিখঃ Nov 2, 2025 ইং
হরিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ

ঠাকুরগাঁওয়ের সীমান্তবর্তী হরিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অনিয়ম ও দুর্নীতির নানা অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, সরকারি এই হাসপাতালটি এখন চিকিৎসাসেবার কেন্দ্র নয়, বরং অনিয়ম ও লুটপাটের ‘আদর্শস্থল’ হয়ে উঠেছে।
সরেজমিনে জানা গেছে, হাসপাতালের ডাক্তার ও কর্মচারীদের একাংশ নিয়মিত উপস্থিত থাকেন না, রোগীরা ঠিকমতো সেবা পান না, এমনকি সরকারি বরাদ্দকৃত ওষুধও মিলছে না। পরিবেশও নোংরা ও অগোছালো, নেই কার্যকর তদারকি বা জবাবদিহিতা।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ঠাকুরগাঁও কার্যালয়ের উপপরিচালক আজমির শরিফ মারজি জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে হরিপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অভিযান চালানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে কিছু অনিয়মের তথ্য পাওয়া গেছে, বিস্তারিত তদন্ত শেষে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সূত্র জানায়, ২০২৩-২০২৪ ও ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে হাসপাতালের এমএসআর টেন্ডারের মাধ্যমে প্রায় ৬৯ লাখ টাকার ওষুধ ও অন্যান্য সামগ্রী ক্রয়ের অর্থ পরিশোধ হলেও, বেশিরভাগ মালামাল গ্রহণ করা হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়াও, সরকার কর্তৃক বরাদ্দ প্রজেক্টর না কিনে এক লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শামীমুজ্জামানের বিরুদ্ধে।
এছাড়া, হাসপাতালের আয়া মোছা. সুরাইয়া বেগমের পরিবর্তে ঘুষের বিনিময়ে শান্তি বেগম নামে এক নারী ২০২৩ সাল থেকে অবৈধভাবে কাজ করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ অনুযায়ী, তিনি সুরাইয়ার নামে স্বাক্ষর ও ডিজিটাল হাজিরা দিচ্ছেন।
স্থানীয় সাংবাদিকরা এসব বিষয়ে তথ্য অধিকার আইনের মাধ্যমে তথ্য চাইলেও ডা. শামীমুজ্জামান আবেদন গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান। ডাকপিয়ন চিঠি ফেরত দিতে বাধ্য হন বলে অভিযোগকারীরা জানান।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. আনিছুর রহমান বলেন, “বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবহিত। টাইফয়েড ভ্যাকসিন ক্যাম্পেইন চলায় হয়তো ডা. শামীমুজ্জামান মাঠপর্যায়ে ব্যস্ত আছেন। তবে তিনি যদি তথ্য অধিকার আইনের ফরম গ্রহণ না করে থাকেন, আবেদনটি আমার বরাবর পাঠাতে পারেন—আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”
উল্লেখ্য, দুদকের অভিযানের পর থেকে ডা. শামীমুজ্জামান নিয়মিত অফিসে থাকছেন না বলে জানা গেছে। বর্তমানে তিনি পাশের উপজেলা রাণীশংকৈলে অবস্থান করছেন বলে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে।
© সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃ Mirror News