ঢাকা

আবারও কেঁপে উঠেছে আফগানিস্তানের মাটি

  • নিউজ প্রকাশের তারিখ : ইং
ছবি:সংগৃহীত ছবি:সংগৃহীত

আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলে আবারও কেঁপে উঠেছে মাটি। মাজার-ই-শরিফের কাছে আঘাত হানা শক্তিশালী ভূমিকম্পে অন্তত আটজনের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন দেড় শতাধিক মানুষ। স্থানীয় সময় রোববার গভীর রাতে এ ভূমিকম্প অনুভূত হয়, যা কয়েক সেকেন্ড স্থায়ী ছিল বলে জানিয়েছে প্রত্যক্ষদর্শীরা।

মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানায়, ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৬ দশমিক ৩ এবং কেন্দ্রস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২৮ কিলোমিটার গভীরে। ভূমিকম্পের পর বেশ কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। অনেক মানুষ ঘর ছেড়ে খোলা জায়গায় রাত কাটিয়েছেন আতঙ্কে।

সামানগান প্রদেশের স্বাস্থ্য বিভাগের মুখপাত্র শামিম জোয়ান্দা জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত ৮ জনের মৃত্যু ও ১৫০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহতদের অধিকাংশই ভবনধসের নিচে চাপা পড়ে বা ধ্বংসস্তূপে আঘাত পেয়ে আহত হয়েছেন। স্থানীয় হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ বেড়ে গেছে।

বালখ প্রদেশের মুখপাত্র হাজি জায়েদ বলেন, ঐতিহাসিক ব্লু মসজিদের একটি অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া পার্শ্ববর্তী কয়েকটি গ্রামে ঘরবাড়ি ধসে পড়েছে এবং বহু পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে। স্থানীয় প্রশাসন উদ্ধারকর্মীদের নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করেছে।

জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানায়, ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ হিসাব পেতে সময় লাগবে। প্রত্যন্ত কিছু অঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় সেখানে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, লোকজন ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে আহতদের বের করার চেষ্টা করছেন। অনেক পরিবার এখনো নিখোঁজ স্বজনদের খুঁজে ফিরছে। তবে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স এসব ভিডিওর সত্যতা স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি।

এর আগে, গত আগস্ট মাসে আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে ৬ মাত্রার আরেক ভূমিকম্পে দুই হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল। দেশটির ভূতাত্ত্বিক গঠন এমন যে, প্রায় প্রতি বছরই একাধিক বড় ভূমিকম্পের মুখোমুখি হতে হয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তান বিশ্বের অন্যতম ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল। গত এক শতাব্দীতে এখানে রিখটার স্কেলে সাত বা তার বেশি মাত্রার ডজনখানেক ভূমিকম্প ঘটেছে। এবারও সেই ইতিহাসই যেন পুনরাবৃত্তি হলো।

মানবিক সহায়তা সংস্থাগুলো ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় জরুরি সহায়তা পাঠাতে শুরু করেছে। তবে কঠিন ভূপ্রকৃতি এবং সীমিত অবকাঠামোর কারণে উদ্ধার তৎপরতা ধীরগতিতে চলছে। স্থানীয়রা বলছেন, “আমরা ভয় পাচ্ছি—প্রতি মুহূর্তেই মনে হচ্ছে আবার কেঁপে উঠবে মাটি।”



কমেন্ট বক্স