আধিপত্য বিস্তার নিয়ে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জের ধরে ঝিনাইদহে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। আজ সোমবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে সদর উপজেলার কলামনখালী বাজারে জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আসাদ চৌধুরী এবং আরাফাত রহমান কোকো ক্রীড়া পরিষদ নেতা মাসুদ জোয়ার্দার পক্ষের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
আহত ব্যক্তিদের মধ্যে আবদুর রহিম মোল্লা, বিসারত জোয়ার্দার, হাসেম আলী, গোলাম রসুল, সুরুজ, ইয়ালিদসহ ১০ জনকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক সুলতানা মেফতাহুল জান্নাত জানান, আহত ব্যক্তিদের শরীরে ধারালো অস্ত্র ও ইটের আঘাতের ক্ষত আছে। তবে তাঁদের শারীরিক অবস্থা শঙ্কামুক্ত।
স্থানীয় লোকজন বলেন, সদর উপজেলার কলামনখালী এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও দোগাছি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান আসাদ চৌধুরী পক্ষের সঙ্গে মাসুদ জোয়ারদার ও নাঈম পক্ষের সমর্থকদের বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে কয়েক দিন আগেও উভয় পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। এসবের জের ধরে আজ সকালে কলামনখালী বাজারে উভয় পক্ষের সমর্থকেরা দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হন।
ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি–অপারেশন) সামছুজ্জোহা বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এলাকায় এখন অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন আছে।
হাসপাতালে চিকিৎসারত বিসারত জোয়ার্দার বলেন, মাসুদ পক্ষের লোকজন গ্রামের উত্তর পাড়ার আসাদ পক্ষের কয়েকজনকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। এ ছাড়া আমিরুল নামের এক ব্যক্তিকে মেরে পা ভেঙে দেন। এ নিয়ে মীমাংসা করার কথা বললেও নেতারা কারও কথা শোনেন না। এরই জের ধরে সকালে বাজারে দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়।
জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও দোগাছি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আসাদ চৌধুরী বলেন, ‘মাসুদের লোকজন আমাদের এক সমর্থক আমিরুলকে কিছুদিন আগে পিটিয়ে পা ভেঙে দেয়। পরে তারা বাজার দখল করে রাখে। আজ সকালে এসে বাজারের দোকানপাট সব বন্ধ করে দেয়। এর জের ধরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।’
অভিযোগ অস্বীকার করে আরাফাত রহমান কোকো ক্রীড়া পরিষদের ঝিনাইদহ সদর উপজেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুদ বলেন, ‘বাজার দখল বা দোকানপাট বন্ধের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তারা আমাদের ওপর মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছে। আমিরুলকে আমরা মারধর করিনি, আমিরুলের পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারণে তার পরিবারের লোকজন তার ওপর আঘাত করে।’
বিষয়টি নজরে আনা হলে জেলা বিএনপির সভাপতি এম এ মজিদ দাবি করেন, এলাকায় আধিপত্য নিয়ে তাঁদের মধ্যে দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব ছিল। এটা রাজনৈতিক কোনো বিষয় নয়।