গত বছরের ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় পুলিশের গুলিতে ছয় তরুণ নিহত ও তাদের লাশ পুড়িয়ে ফেলার ঘটনায় দায়ী সাবেক এমপি সাইফুল ইসলামসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মানবতাবিরোধী মামলায় ২০ জন সাক্ষীর জেরা ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেছে।
বিচারিক প্যানেলটি ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। অন্য দুই সদস্য হলেন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদ ও জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর। বুধবার বেলা সোয়া ১১টার পর বিচার কার্য শুরু হয়। প্রথমে জব্দতালিকার সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন আশুলিয়া থানার এসআই মো. আশরাফুল হাসান। পরে তাকে পলাতক আট আসামির পক্ষে স্টেট ডিফেন্স ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জেরা করেন।
এ পর্যন্ত মামলায় ২০ জন সাক্ষীর জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য—সিআইডি ফরেনসিক শাখার আলোকচিত্র বিশেষজ্ঞ ওমর ফারুক খান, এএসপি এনায়েত, শহীদ বায়োজিদ বোস্তামীর ভাই কারিমুলসহ বিভিন্ন প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সদস্যরা।
ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করছেন প্রসিকিউটরগণ গাজী এমএইচ তামিম, ফারুক আহাম্মদ, আবদুল্লাহ আল নোমান ও সহিদুল ইসলাম। মামলার অভিযোগপত্রে জড়িত প্রমাণের মধ্যে ৩১৩ পৃষ্ঠা লিখিত তথ্য, ৬২ সাক্ষী ও ১৬৮ পৃষ্ঠার দালিলিক প্রমাণাদি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
মামলার ঘটনাপ্রসঙ্গে জানা যায়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় পুলিশের গুলিতে নিহত ছয় তরুণকে পুলিশের ভ্যানে তুলে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এক পর্যায়ে একজন জীবিত ছিলেন, কিন্তু তাকে বাঁচানো হয়নি। পেট্রোল ঢেলে ভ্রূণহীন হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।
এর আগে গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় গ্রেপ্তাররা হলেন—ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. আব্দুল্লাহিল কাফী, সাবেক অতিরিক্ত সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহিদুল ইসলাম, পরিদর্শক আরাফাত হোসেন, এসআই মালেক, এসআই আরাফাত উদ্দিন, এএসআই কামরুল হাসান, আবজাল ও কনস্টেবল মুকুল। তবে সাবেক এমপি সাইফুলসহ আটজন এখনও পলাতক।
সাক্ষ্যগ্রহণের মাধ্যমে মামলার সব তথ্যপ্রমাণ একে একে আদালতে উন্মোচিত হচ্ছে। ট্রাইব্যুনাল সূত্রে জানা গেছে, আগামী সাক্ষ্যগ্রহণে আরও বেশ কিছু প্রত্যক্ষদর্শী ও তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে হাজির হবেন। মামলার চূড়ান্ত রায় কখন প্রকাশ হবে, তা এখনও নির্ধারিত হয়নি।
নিউজ ডেস্ক