শিশুদের স্বাস্থ্য ও পুষ্টির জন্য ডিম একটি গুরুত্বপূর্ণ খাবার। কিন্তু বাজারে বিভিন্ন ধরনের ডিম পাওয়া যায়—কোয়েল, দেশি, ব্রয়লার বা হাঁসের। কোনটি বাচ্চার জন্য সবচেয়ে ভালো? এই পোস্টে আমরা প্রতিটি ডিমের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা এবং বাচ্চার জন্য নিরাপদ ব্যবহার সম্পর্কে সব তথ্য এক জায়গায় তুলে ধরছি।
ডিম শিশুর জন্য আদর্শ পুষ্টিকর খাবার, কারণ এতে থাকে প্রোটিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম, কোলিন ও ভিটামিন–যা বাচ্চার মস্তিষ্ক, হাড় ও শরীরের বৃদ্ধি নিশ্চিত করে। তবে কোন ডিমটি সবচেয়ে ভালো – সেটা অনেক মা’ই জানেন না।
কোয়েলের ডিম:
• পুষ্টিতে ঘন, ছোট আকার হলেও এতে আয়রন, ভিটামিন বি১২, জিঙ্ক ও সেলেনিয়াম বেশি থাকে।
• হজমে তুলনামূলক সহজ।
• তবে কিছু বাচ্চার ক্ষেত্রে এলার্জি হতে পারে, তাই প্রথমবার অল্প করে দিন।
উপযুক্ত বয়স: ৮ মাসের পর থেকে সিদ্ধ করে অল্প পরিমাণে দেওয়া যায়। কুসুম দিয়ে শুরু করুন।
দেশি মুরগির ডিম:
• সবচেয়ে নিরাপদ ও পুষ্টিকর বিকল্প।
• এতে প্রোটিন, ওমেগা-৩, কোলিন ও ক্যালসিয়াম বেশি থাকে।
• কোনো হরমোন বা কেমিক্যাল ছাড়া প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত হয়।
• দেশি ডিম নিয়মিত দিলে বাচ্চার মস্তিষ্কের বিকাশ ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
উপযুক্ত বয়স: ৭ মাস পার হলে কুসুম দিয়ে শুরু করুন, পরে সাদা অংশ যোগ করুন।
ব্রয়লার মুরগির ডিম:
• দাম কম ও সহজলভ্য। ওজন বেশি তাই পুষ্টিগুন তুলনামূলক বেশি। সব ধরনের প্রায় ১১ টা খনিজ থাকে। একটি ডিমে প্রায় ৪০ গ্রাম ক্যালরি থাকে।
• তবে ব্রয়লার মুরগিকে অনেক সময় দ্রুত বড় করার জন্য হরমোন বা অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়। রোদে যাওয়ার সুযোগ থাকেনা সেজন্য ভিটামিন-ডি এর পরিমান কম।
হাঁসের ডিম:
• প্রোটিন বেশি, কিন্তু কোলেস্টেরলও বেশি।
• হজমে ভারি, তাই ছোট বাচ্চার জন্য উপযুক্ত নয়।
• ২ বছর বয়সের পর অল্প করে দেওয়া যেতে পারে।
সারসংক্ষেপ:
• ডিমের ধরন উপকারিতা বয়স অনুযায়ী পরামর্শ
• কোয়েলের ডিম আয়রন, ভিটামিনে ভরপুর ৮ মাসের পর
• দেশি মুরগির ডিম সবচেয়ে নিরাপদ ও পুষ্টিকর৭ মাসের পর
• ব্রয়লার ডিম সহজলভ্য,উৎপাদান পদ্ধতি ঠিক থাকলে এই ডিম অনেক উপকারী , কিন্তু হরমোন ঝুঁকি থাকতে পারে।
• হাঁসের ডিম ভারি, কোলেস্টেরল বেশি ২ বছর পর
সবচেয়ে ভালো বিকল্প:
• দেশি মুরগির ডিম — পুষ্টি, নিরাপত্তা ও স্বাদের দিক থেকে শিশুদের জন্য সেরা।
• তবে available না থাকলে কোয়েল ও ব্রয়লার মুরগীর ডিম দিতে পারেন।
পরামর্শ:
• সবসময় ডিম ভালোভাবে সিদ্ধ করে দিন।
• নতুন ডিম প্রথমবার দিলে অল্প পরিমাণে দিন এবং ৩ দিন পর্যবেক্ষণ করুন এলার্জি হয় কিনা।
• কুসুম দিয়ে শুরু করে ধীরে ধীরে সাদা অংশ দিন।