জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির দাবি, ঐকমত্য কমিশন প্রস্তাবিত বাস্তবায়ন রূপরেখার প্রথম খসড়া (প্রস্তাব–১) গ্রহণ করলেই সনদের আইনি ভিত্তি প্রতিষ্ঠা পাবে।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) এক লিখিত বিবৃতিতে এনসিপির পক্ষ থেকে এই আহ্বান জানানো হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, জুলাই সনদ কেবল রাজনৈতিক সমঝোতার কাগজ নয়, এর আইনি ভিত্তি থাকা জরুরি। এনসিপি শুরু থেকেই এই অবস্থানে ছিল এবং সনদের খসড়া আদেশ না দেখে স্বাক্ষর না করার সিদ্ধান্ত নেয়।
দলটি মনে করে, এনসিপির আপোষহীন অবস্থান এবং ধারাবাহিক দাবি-আন্দোলনের ফলেই জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সম্প্রতি সরকারের কাছে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের রূপরেখা জমা দিয়েছে। এ জন্য এনসিপি কমিশনের প্রচেষ্টাকেও সাধুবাদ জানিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, কমিশন দুই ধরনের সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছে—একটি সংবিধান সম্পর্কিত নয়, অন্যটি সংবিধান সংশোধনমূলক। সংবিধান সংশ্লিষ্ট সংস্কার বাস্তবায়নে কমিশন দুটি পৃথক খসড়া দিয়েছে। এর মধ্যে প্রথম খসড়াটি (প্রস্তাব–১) বাস্তবায়নের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে এনসিপি।
দলটির মতে, প্রস্তাব–১–এর ৮(ঙ) ধারায় বলা হয়েছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সংবিধান সংস্কার পরিষদ কাজ শেষ করতে না পারলে তার গৃহীত বিল স্বয়ংক্রিয়ভাবে আইনে পরিণত হবে। এটি গণভোটে প্রদত্ত জনম্যান্ডেট বাস্তবায়নের বাধ্যবাধকতা তৈরি করবে, যা বিশ্বের বহু দেশে প্রচলিত পদ্ধতি।
অন্যদিকে প্রস্তাব–২–এ এমন কোনো বাধ্যবাধকতার কথা নেই, যা সংস্কার প্রক্রিয়া ব্যাহত করতে পারে বলে মনে করছে এনসিপি।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, প্রস্তাব–১–এর ভাষাগত কিছু অস্পষ্টতা দূর করা জরুরি। যেমন ৮(ক) ও ৮(ঘ) ধারার কিছু শব্দচয়ন বিভ্রান্তি তৈরি করছে, যা সংশোধন করতে হবে।
এনসিপির দাবি, সরকারকে অবিলম্বে—
১. ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব–১ গ্রহণ করে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করতে হবে।
২. সংবিধান সংস্কার বিলের খসড়া প্রণয়ন করে তা জনসম্মুখে উন্মুক্ত করতে হবে।
৩. প্রস্তাব–১ গ্রহণের পরই জুলাই সনদে এনসিপির স্বাক্ষর প্রক্রিয়ায় অগ্রগতি আসবে।
দলটি মনে করে, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রতিষ্ঠা ছাড়া দেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের যাত্রা অর্থবহ হবে না।