ঢাকা

বিএনপি না জামায়াত, কার সঙ্গে ভোট করবে এনসিপি?

  • নিউজ প্রকাশের তারিখ : ইং
ছবি : সংগৃহীত ছবি : সংগৃহীত
ChatGPT said:

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে শুরু হয়েছে জোট ও আসন সমঝোতার রাজনীতি। প্রতি নির্বাচনের আগেই রাজনীতিতে ভাঙা–গড়ার এই খেলা দেখা যায়। এবার সেই সমীকরণে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে তরুণদের উদ্যোগে গঠিত নতুন রাজনৈতিক দল—জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। 


দেশের অন্যতম বৃহৎ দল বিএনপি এনসিপিকে নিজেদের নির্বাচনি জোটে অন্তর্ভুক্ত করতে চায়, অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামিও নাহিদ নেতৃত্বাধীন এই দলটিকে সঙ্গে রাখার চেষ্টা করছে। ফলে রাজনৈতিক দরকষাকষির ক্ষেত্রে বর্তমানে বেশ সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে এনসিপি। শেষ পর্যন্ত দলটি কার সঙ্গে জোট বাঁধবে বা স্বাধীনভাবে লড়বে—সেটিই এখন রাজনৈতিক অঙ্গনের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।


চব্বিশের ৫ আগস্টের পরবর্তী রাজনীতিতে তৈরি হয় নতুন মেরুকরণ। দীর্ঘদিনের মিত্র বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী একে অপরের থেকে দূরে সরে যায়। জামায়াত আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপির সঙ্গে জোট ভাঙার ঘোষণা দেয় এবং বিপ্লব পরবর্তী সময় থেকে নিজেরা রাষ্ট্রক্ষমতায় যাওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করে। অন্তত সংসদে বিরোধী দলের আসনে আসীন হওয়ার আশায় তারা এখন বিএনপির প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন, গণভোটসহ নানা ইস্যুতে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে দ্বন্দ্ব আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এনসিপির সঙ্গেও জামায়াতের সম্পর্কের অবনতি ঘটে, যা দুই দলের নেতাদের বক্তব্যেও প্রকাশ পাচ্ছে।


এই পরিস্থিতিকে কৌশলগতভাবে কাজে লাগাতে চায় বিএনপি। দলটি তরুণদের সম্পৃক্ত করে নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী, আর সেই সূত্রেই এনসিপির সঙ্গে তাদের যোগাযোগ বাড়ছে। বিএনপি ও এনসিপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের মধ্যে নেপথ্যে আলোচনা চলছে বলে সূত্র জানিয়েছে।


রাজনৈতিক মহলের মতে, বিএনপি এনসিপিকে নিজেদের জোটে টানতে চায়, তবে জামায়াতে ইসলামিও একই চেষ্টা করছে। উভয় দলের পক্ষ থেকেই বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধিরা নেপথ্যে এনসিপি নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।


বিশ্লেষকদের মতে, জোট, মহাজোট, আসন ভাগাভাগি এবং প্রার্থী মনোনয়নের আলাপ–আলোচনার মাঝেও নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টার অবস্থান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে—কেউ কেউ নাকি বড় দুই দলের একটির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছেন, আবার কেউ নিরাপদ রাজনৈতিক অবস্থান খুঁজছেন।


নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনসিপির এক যুগ্ম আহ্বায়ক বলেন, “বিএনপি চাইছে, আমরা যেন কোনোভাবেই জামায়াতের জোটে না যাই। এজন্য ঢাকার বেশ কয়েকটি আসনসহ অন্তত ২০টি আসনে সমঝোতার প্রস্তাব দিয়েছে তারা। এমনকি বিএনপি সরকার গঠন করতে পারলে এনসিপিকে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাবও এসেছে।” তবে এসব বিষয়ে এখনো এনসিপির আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।


এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদিব বলেন, “আমাদের বেশিরভাগ নেতাকর্মী আসন্ন নির্বাচনে অন্য কোনো দলের সঙ্গে জোট না করে স্বাধীনভাবে লড়ার পক্ষে মত দিয়েছেন। ‘আসন সমঝোতা’ শব্দটির সঙ্গে আমরা একমত নই। তবে অভিন্ন লক্ষ্য ও রাজনৈতিক বোঝাপড়ার ভিত্তিতে প্রার্থী মনোনয়ন হতে পারে।”


বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “এনসিপির সঙ্গে আমাদের রাজনৈতিক যোগাযোগ রয়েছে। তবে জোট গঠন হবে কি না, তারা আমাদের সঙ্গে থাকবে কি না—এসব নির্ধারণ হবে রাজনৈতিক বাস্তবতার ওপর ভিত্তি করে। এখনই কিছু নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয়।”




কমেন্ট বক্স