ঢাকা

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বুলিং ও মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি

  • নিউজ প্রকাশের তারিখ : ইং
ছবি : সংগৃহীত ছবি : সংগৃহীত

আজকের ডিজিটাল ও প্রতিযোগিতামূলক যুগে শিশু-কিশোরদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ দিন দিন বাড়ছে। এর অন্যতম কারণ হলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বুলিং। বন্ধুদের কাছ থেকে শারীরিক, মৌখিক কিংবা সামাজিকভাবে উপহাস, হুমকি বা অপমানের শিকার হওয়া অনেক শিক্ষার্থীর মানসিক ভারসাম্য নষ্ট করে দিচ্ছে।


বুলিং কী ও কিভাবে ঘটে:
বুলিং মানে কোনো মানুষকে ইচ্ছাকৃতভাবে কষ্ট দেওয়া, উপহাস করা বা সমাজচ্যুত করার চেষ্টা করা। এটি হতে পারে সরাসরি (মারধর, ঠাট্টা, গালাগালি) কিংবা পরোক্ষভাবে (গুজব রটানো, দল থেকে বাদ দেওয়া, অনলাইনে হেয় করা)। সাম্প্রতিক সময়ে “সাইবার বুলিং”-এর হারও বেড়েছে, যেখানে সোশ্যাল মিডিয়া বা অনলাইন চ্যাটের মাধ্যমে অন্যকে অপমান বা ভয় দেখায়।


মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব:
বুলিংয়ের শিকার শিক্ষার্থীরা ধীরে ধীরে আত্মবিশ্বাস হারায়, পড়াশোনায় মনোযোগ কমে যায় এবং অনেক সময় বিষণ্নতা বা উদ্বেগে ভোগে। কেউ কেউ নিজের প্রতি ঘৃণা অনুভব করে, এমনকি আত্মহত্যার চিন্তাও করতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, স্কুলে নিয়মিত বুলিংয়ের শিকার হওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মমর্যাদা কমে যাওয়া, একাকীত্ব এবং দীর্ঘমেয়াদি মানসিক আঘাতের ঝুঁকি অনেক বেশি।


পরিবার ও স্কুলের ভূমিকা:
বুলিং প্রতিরোধে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে পরিবার ও প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ।
🔹অভিভাবকদের উচিত সন্তানের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করা, তাদের দিনযাপন সম্পর্কে জানা এবং মানসিকভাবে সহায়তা করা।  
🔹শিক্ষকদের উচিত শ্রেণিকক্ষে বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করা এবং যেকোনো ধরনের উপহাস বা অপমানকে গুরুত্ব সহকারে দেখা।  
🔹প্রতিষ্ঠান প্রশাসন নিয়মিত মনোসামাজিক কাউন্সেলিং সেশন আয়োজন করতে পারে, যেখানে শিক্ষার্থীরা নিজেদের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে পারবে।


করণীয়:
▪️শিক্ষার্থীদের মধ্যে সহানুভূতি ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ গড়ে তোলা।
▪️অ্যান্টি-বুলিং নীতি ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি চালু করা  
▪️আক্রান্তদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা কেন্দ্র ও পরামর্শক নিয়োগ করা  
▪️ডিজিটাল নিরাপত্তা শিক্ষা প্রদান করা, যাতে সাইবার বুলিংয়ের ঝুঁকি কমে  


বুলিং কোনো ক্ষুদ্র মজা নয়, এটি একটি গভীর সামাজিক সমস্যা যা মানুষের সারাজীবনের মানসিক স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলে। তাই সময় এসেছে স্কুল, পরিবার ও সমাজ সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার যেন প্রতিটি শিক্ষার্থী নিরাপদ, সম্মানজনক ও ভালোবাসাপূর্ণ পরিবেশে বেড়ে উঠতে পারে।




কমেন্ট বক্স