খুলনা প্রতিনিধি: খুলনার রূপসায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পারভেজ মল্লিকের ওপর হামলা চালিয়েছে দলের আরেক নেতা আজিজুল বারি হেলালের সমর্থকরা। একই সঙ্গে কাজদিয়া বাজারে বিএনপির একটি অফিসেও ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।
ঘটনা ঘটে বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে রূপসা উপজেলার কাজদিয়া বাজারে। হামলাকারীরা বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারি হেলালের অনুসারী। এই হামলায় পরপর দুবার পারভেজ মল্লিক এবং তার নেতাকর্মীরা আক্রান্ত হন।
রূপসা থানার অফিসার ইনচার্জ মাহফুজুর রহমান ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “আজ সকালেও হেলালপন্থি সমর্থকরা স্থানীয় কয়েকজন নেতাকর্মীকে মারধর করেছে। এ ঘটনায় পাঁচজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পরে তারা আবার কাজদিয়া বাজারে বিএনপির একটি অফিসে হামলা চালায়, ভাঙচুর ও লুটপাট করে।”
স্থানীয় সূত্র জানায়, পারভেজ মল্লিক কাজদিয়া কলেজে এক কর্মসূচিতে অংশ নেন। তার উপস্থিতি কেন্দ্র করে হেলালপন্থি কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এবং তারা ক্ষিপ্ত হয়ে স্থানীয় বিএনপি কার্যালয়ে হামলা চালায়। অফিসের আসবাবপত্র ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়, পাশাপাশি পারভেজ মল্লিকের অনুসারীদের ওপরও মারধর করা হয়। হামলার সময় পারভেজ মল্লিক ওই অফিসেই অবস্থান করছিলেন। ঘটনার পর এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয়, দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে এবং বর্তমানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
স্থানীয় নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেন, “রূপসায় আমাদের একাধিক প্রোগ্রাম ছিল। পারভেজ মল্লিককে বাধা দিতে আজিজুল বারি হেলালের লোকজন হামলা চালিয়েছে।”
হামলায় অংশ নেয়া নেতাকর্মীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন: আতাউর রহমান রুনু, গোলাম মোস্তফা তুহিন, রিয়াজ মোল্লা, মহিউদ্দিন মিন্টু, বনি আমিন সোহাগ, শাহজামান প্রিন্স, এস.এম আবু সাঈদ, তরিকুল ইসলাম রিপন, মুক্তাদির বিল্লাহ, এস.এম ফরাহাদ, জাহিদুল ইসলাম, আজিজুর রহমান, আসাদুল ইসলাম বিপ্লব, পাপ্পু মীর, সাকির চৌধুরী, ফিরোজ মেম্বার, নাঈম শেখ, ইসরাইল বাবু, এনায়েত শেখ, মেহেদী হাসান এবং প্রায় শতাধিক নেতা-কর্মী।
পারভেজ মল্লিক বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে দেশের জন্য কাজ করছি, বিএনপির সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধির জন্য ত্যাগ করেছি। আজ রূপসায় আমাদের কর্মসূচিতে যে বর্বরোচিত হামলা হয়েছে, তা শুধু আমার ওপর নয়, বিএনপির আদর্শ, ঐক্য ও গণতান্ত্রিক চেতনার ওপরও আঘাত। আমি স্পষ্টভাবে বলছি, আমি কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে নই, আমি বিএনপির আদর্শ ও তারেক রহমানের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করছি। যারা নিয়মিত তারেক রহমানের নির্দেশনা অমান্য করছে, তাদের বিচার চাই।”
রূপসা থানার ওসি বলেন, “সকালে হামলার খবর পেয়ে আমরা টহল দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”